দিনাজপুরে ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বৃদ্ধ বাবার ওপর হামলাকা-ে একের পর এক অনেক প্রশ্ন জমছে; কিন্তু জবাব মিলছে না। গ্রেপ্তার আসাদুল হকের বরাত দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, তারা ‘চুরির উদ্দেশ্যে’ ইউএনওর বাসায় প্রবেশ করেছিল। যদিও এ নিয়ে সন্দিহান খোদ তদন্তকারী সংস্থা। এমন প্রেক্ষাপটে হামলার নেপথ্য কারণ খুঁড়তে গিয়ে কেউটে সাপও বেরিয়ে আসতে পারেÑ ধারণা অনেকের। এদিকে গ্রেপ্তারের পর যুবলীগ থেকে বহিষ্কৃত নেতা আসাদুল হকের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
দিনাজপুর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. ইসরাইল হোসেন জানান, গতকাল রবিবার বিকাল ৫টায় দিনাজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবিএম মনিরুজ্জামানের আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক আবু ইমাম জাফর গ্রেপ্তারকৃত আসাদুল হককে সোপর্দ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। বিচারক শুনানি শেষে ৭ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ডিবি পুলিশ আসাদুলকে আদালত থেকে তাদের হেফাজতে নিয়ে যায় এবং জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।
এরও আগে এ হামলা মামলার অপর দুই আসামি নবিরুল ইসলাম (৪০) ও সান্টু কুমার দাসেরও (৩৫) ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। তারা দুজনও ডিবির হেফাজতে রয়েছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে নবিরুল ও সান্টু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। তাই এ মুহূর্তে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাননি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দিনাজপুর ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আবু ইমাম জাফর।
গত বুধবার মধ্যরাতে একাধিক দুর্বৃত্ত ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদের নৈশপ্রহরীকে বেঁধে রেখে পরিষদের ভেতরে অবস্থিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসায় প্রবেশ করে।
ভেন্টিলেটর ভেঙে কক্ষে প্রবেশ করে দুর্বৃত্তরা ওয়াহিদা খানমের মাথায় হাতুড়ি দিয়ে একের পর এক আঘাত করে। এ সময় ওয়াহিদার বাবা শেখ ওমর আলী মেয়েকে রক্ষায় এগিয়ে এলে তার ওপরও হামলা চালানো হয়। ভোরে তাদের গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ওয়াহিদা খানমকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অস্ত্রোপচারের পর এখন সেখানেই চিকিৎসাধীন ইউএনও ওয়াহিদা খানম।
এ হামলাকা-ের জেরে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের পরিবারের তরফে ঘোড়াঘাট থানায় মামলা করা হয়েছে। এর পর অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে আটক করে র্যাব-পুলিশ। হামলাকা-ে প্রাথমিকভাবে কোনো সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় পরবর্তী সময়ে যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম, মাসুদ রানা ও নাহিদ হোসেন পলাশকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
Leave a Reply